মসৃণ নীল রঙের ধাতব শরীরে বেখাপ্পা সাদা আঁচড়! ইতিমধ্যে এই ছবি সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিটি একটি বিমানের লেজের নীচের অংশের। সূত্রের দাবি, উড়ান শুরু করার মুখে রানওয়েতে আঁচড় খেয়েই নাকি তৈরি হয়েছে ওই ক্ষত!

যে বিমান এত আলোচনা, সেটি ইন্ডিগো সংস্থার। জানা গিয়েছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরুগামী বিমান ৬ই ৬০৫৪ দিল্লি বিমানবন্দর থেকে উড়ান শুরু করার সময় কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়ে। তার জেরেই বিমানের লেজের অংশ নীচের দিকে নেমে এসে রানওয়েতে ঘষা খায়। এর ফলে লেজের ওই অংশের নীল রঙের ধাতব শরীরের চাটা উঠে যায়।

বিমানের লেজে আঁচড়ের ওই ছবি দেখে তথ্যাভিজ্ঞ মহলের দাবি, এই ঘটনা যথেষ্ট গুরুতর। বিমানটি রানওয়েতে ভালোভাবে ধাক্কা খেয়েছিল, এই ছবিই তার প্রমাণ।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, এই ধরনের ঘটনা যে একেবারে কখনও ঘটে না, তা নয়। সাধারণত, উড়ানের একেবারে শুরুতে অথবা অবতরণের মুহূর্তে বিমানের লেজের অংশ রানওয়ে স্পর্শ করলে এই ধরনের আঁচড় লাগতে পারে।

এই ধরনের ঘটনা যেকোনো সময় বড় কোনো অঘটন ঘটাতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, এর ফলে বিমানের গঠনগত কোনো বিরাট ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে প্রেসার বাল্কহেড সংলগ্ন অংশে, যা চাপযুক্ত কেবিন সিল করে রাখে, সেই অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

৯ সেপ্টেম্বরের ঘটনাটি নজরে আসতেই দ্রুত পদক্ষেপ করেন পাইলট। তিনি তৎক্ষণাৎ গোটা ঘটনা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে (এটিসি) জানান। সমস্যা গুরুতর হতে পারে বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে বিমানটিকে দিল্লি বিমানবন্দরে ফেরত আসার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর নিরাপদভাবে দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করে ইন্ডিগোর ওই বিমান।

সূত্রের দাবি, এই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। তবে, কেন এমনটা হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) এবং দিল্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

ঘটনার সময় যে কর্মীরা কর্তব্যরত ছিলেন, ডিজিসিএ’র তরফে আপাতত তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং কীভাবে এমন একটি গুরুতর ঘটনা ঘটল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ওই দিনের ঘটনার পর বিমানটিকে দিল্লির বিমানবন্দরে অবতরণ করানোর পর যাত্রীদের দ্রুততার সঙ্গে বিমান থেকে নামিয়ে আনা হয়। তাঁদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়।

তবে, এই গোটা ঘটনায় ইন্ডিগোর তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তারা আপাতত মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে।