নিম্নচাপের কারণে লাগাতার বৃষ্টিতে গ্রামবাংলায় সৃষ্টি হয়েছে জলমগ্ন পরিস্থিতি। ডিভিসি মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৪৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার ফলে দুর্গত এলাকার সংখ্যা বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গতদের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন, এবং তৃণমূলের নেতারা বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করছেন। হুগলি, আরামবাগ, খানাকুল ও গোঘাটে বিপর্যয়ের চিত্র ভয়াবহ। আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে রাখা হয়েছে এবং তাঁদের খাদ্য ও থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিধায়কদের জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, যাতে দ্রুত সাহায্য পৌঁছে দেওয়া যায়। এই পরিস্থিতিতে জনগণের সেবা নিশ্চিত করাই মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান লক্ষ্য।
বৃষ্টিতে জলে ভাসছে দক্ষিণবঙ্গ, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু
নিম্নচাপের কারণে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে, শহর এলাকায় কিছুটা থামলেও গ্রামবাংলায় অবস্থা খুব খারাপ। অতিবৃষ্টির ফলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকা। ডিভিসি মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৪৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়ে দেওয়ার পর গ্রামের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আজ সোমবার, মাইথন থেকে ১০ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার ফলে বানভাসী পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনের জন্য মন্ত্রী এবং দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। মুখ্যমন্ত্রী দুর্গতদের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আজই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। হুগলি জেলায় রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না ও ঘাটালের সাংসদ দেব পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা দুর্গত মানুষের হাতে ত্রাণ ও খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছেন এবং আরও সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন।
হুগলি জেলার আরামবাগের বেশিরভাগ এলাকা এখন জলমগ্ন। ১০টি ওয়ার্ড এবং সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অবস্থা খুবই খারাপ। মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে এবং তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেচারাম মান্না মুখ্যমন্ত্রীকে জলমগ্ন পরিস্থিতির রিপোর্ট দেবেন।
এছাড়া, মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণ গোস্বামীকে বনগাঁ লোকসভা এলাকার জলমগ্ন জায়গাগুলি পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন। দেব বলেন, ‘আমার ঘাটাল এখন জলে ভাসছে। মানুষ কষ্টের মধ্যে রয়েছেন।’ বিভিন্ন জায়গায় নদীবাঁধ ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সব দিকেই নজর রাখছেন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
পাঞ্চেত–মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়া হল, বানভাসী পরিস্থিতিতে খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ মমতার
পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা নদী তীরবর্তী অঞ্চলে বানভাসী পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন, বানভাসী এলাকার মানুষের খোঁজ নিতে। তিনি বলেছেন, “আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, কেউ বিপদে না পড়ুক এবং সকলের নিরাপত্তা আমাদের প্রধান লক্ষ্য।” এই জল ছাড়ার ফলে যেসব অঞ্চলে জল জমে গেছে, সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য প্রশাসন জরুরি ত্রাণ ব্যবস্থা চালু করেছে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে সরকার আশাবাদী যে, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা সম্ভব হবে। স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবকরা বানভাসী জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করছে, যাতে তারা সুরক্ষিত ও নিরাপদে থাকতে পারেন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
১. পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে জল ছাড়া কেন হয়েছে?
জল ছাড়া হয়েছে নদীর জলস্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং বানভাসী পরিস্থিতি কাটাতে।
২. বানভাসী মানুষের জন্য কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে?
প্রশাসন ত্রাণ ব্যবস্থা চালু করেছে এবং স্বেচ্ছাসেবকরা সাহায্য করছে।
৩. জল ছাড়ার ফলে কি ধরনের ক্ষতি হয়েছে?
জল ছাড়ার ফলে কিছু এলাকা বানভাসী হয়েছে, তবে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে।
৪. স্থানীয় মানুষ কিভাবে সাহায্য পাবে?
স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে এবং সাহায্য প্রদান করছে।
৫. এই পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে?
সঠিক সময় বলা সম্ভব নয়, তবে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার।