‘মা মুঝে টেগোর বানা দে’ নাটকে মানুষের মনজয় করলেন কাশ্মীরের শিল্পী। দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তিনি গোটা ভারত জুড়ে এই পারফরমেন্স করে চলেছেন নাট্যশিল্পী লাকিজি গুপ্তা। এই নাটকটি ভারত জুড়ে ১২০০-এর বেশি শো করেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দক্ষতা এবং শিল্পী সত্তার কথা তুলে ধরা হয়েছে এখানে। এই নাটকের গল্প আবর্তিত হয় একটি শিশুকে নিয়ে। তার ‘ট্যাগোর’ হয়ে ওঠাকে নিয়ে। পঞ্জাবি লেখক মোহন ভান্ডারীর একটি গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি এই নাটকটি তৈরি করেছেন লাকিজি। গতকাল শিলিগুড়ির ‘সানডে হাটে’ এই নাটকের মাধ্যমে বহু দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, নাটকটি একটি স্কুল পড়ুয়া, একটি শিশুর কবিতা এবং শিল্পের প্রতি তার ভালবাসার যাত্রাকে নিয়ে। এটি মূলত অভিভাবকত্ব, শ্রেণি বিভাজন, সমাজ গঠনে শিল্পের গুরুত্ব এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে একজনের পরিবার এবং আবেগ উভয়ের প্রতি ভালবাসার মতো সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কথা বলে।
একক নাটকে হাজার হাজার মানুষকে নিজের কথা শোনানো বড়ই কঠিন। কিন্তু লাকিজি গুপ্তার সুন্দর গল্প বলার কৌশলের মাধ্যমে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তার অভিনয়ের মাধ্যমে, তিনি নবরসের নয়টি আবেগের উপর গল্প বলার দক্ষতা দিয়ে সেই কঠিন কাজটি করেছেন। কখনও তাঁর দর্শকদের হাসিয়েছেন, কখনও বিস্মিত করেছেন, কখনও লজ্জা দিয়েছেন, কখনও বা ক্ষুব্ধ করেছেন। তাঁর একক অভিনয়ে সত্যি মুগ্ধ করা। তবে তিনি কেবল একা অভিনয় করেন না। দর্শকদের মধ্যে থেকেই কিছু মানুষকে বেছে নেন। তৎক্ষণাৎ তাঁদের দিয়েও অভিনয় করিয়ে নেন লাকিজি। সেই মুহূর্তে নাটকটি হয়ে ওঠে সকলের নাটক, সকলের শিল্প।
ভ্রমণকারী নাট্যশিল্পী লাকিজী গুপ্তা বলেন, ‘‘এই নাটকটি আমি স্কুল ছাত্রদের জন্যই প্রস্তুত করেছিলাম। বিভিন্ন স্কুলের গিয়ে স্টোরি টেলিংয়ের মাধ্যমে এই যাত্রা শুরু হয়েছিল। তবে আজ সমস্ত দর্শকের জন্যই আমি আমার এই নাটক পরিবেশন করি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি যেহেতু পারফর্মার, তাই যতদিন পারব পারফর্ম করে যাব।’’
নাটক দেখতে এসে শিলিগুড়ির প্রবীণ নাট্য শিল্পী ভাস্বতি চক্রবর্তী জানান, ‘‘অসাধারণ কর্মদক্ষতার সঙ্গে লাকিজি এই নাটকটি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। তাঁর নাটকের প্রতিটি সংলাপ মনের মধ্যে গেঁথে রয়েছে। সত্যিই শিক্ষনীয় একটি নাটক। এক দারুণ অভিজ্ঞতা হল আজ।’’